আমাদের দেশের জেলে সম্প্রদায় বিশেষত: জাটকা ও ইলিশ জেলেরা সমাজের সবচেয়ে দরিদ্র শ্রেণির সদস্য। মাছ ধরা ছাড়া তাদের জীবিকার আর বিকল্প কোনো উৎস নেই। আমরা জানি, মৎস্য সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী 0১ নভেম্বর হতে ৩০ জুন পর্যন্ত দেশে সকল নদী, উপকূল ও সাগরে জাটকা ধরা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এছাড়াও অক্টোবর মাসে ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে সংশোধিত আইন অনুযায়ী ২২ (বাইশ)দিন সারাদেশব্যাপী ইলিশ আহরণ বন্ধ থাকে। এই নিষিদ্ধ সময়ে দরিদ্র জেলেরা তখন অর্ধাহারে অনাহারে তাদের দিন কাটায়। তখন সংসার চালানোর জন্য তারা মহাজন বা দাদনদার হতে টাকা ধার করে। তারা অনেকটা দিনমজুরের মতো মহাজনের নৌকা ও জাল নিয়ে মাছ ধরে। ফলশ্রুতিতে জেলেরা মহাজন বা দাদনদার আদেশ নির্দেশ শুনতে বাধ্য হয়। ঋণের কিস্তি পরিশোধ করার জন্য জেলেরা নিষিদ্ধ সময়ে জাল ও নৌকা নিয়ে অবৈধভাবে মাছ আহরণে লিপ্ত হয়। জেলেদের এই অবস্থার উন্নয়নের জন্য প্রকল্পে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্যই হচ্ছে নিরিহ জাটকা ও ইলিশ জেলেদের স্বাবলম্বী করা তথা নিষিদ্ধ সময়ে তাদের বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা। এই লক্ষ্যে প্রকল্পের মাধ্যমে জাটকাসমৃদ্ধ উপজেলা হতে অতিদরিদ্র জেলেদের শনাক্ত করে তাদের চাহিদার ভিত্তিতে এলাকার জন্য উপযোগী বিকল্প অন্য পেশায় নিয়োজিত করার সুযোগ রাখা হয়েছে। বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্য এককালীন ২৫,০০০.00 (পঁচিশ হাজার) টাকার উপকরণ সহায়তা প্রদান করা হবে। প্রকল্প মেয়াদে ইলিশ আহরণকারী মোট ৩০,০০০ (ত্রিশ হাজার) টি জেলে পরিবারকে এই সহায়তা প্রদান করা হবে। তবে প্রকল্পের শর্তানুযায়ী যে সকল জেলে ইতোমধ্যে অন্য কোনো সংস্থা বা এনজিও হতে সহায়তা লাভ করেছে তারা এই সহায়তা পাবে না। সুফলভোগীদের তালিকা তৈরী ও তাদের বেইজলাইন সার্ভের কাজটি প্রকল্পে নিয়োজিত সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা ও ক্ষেত্র সহকারীগণ করবেন। তাদের প্রয়োজনীয় কারিগরি সহায়তা প্রদান করবেন উপজেলা মৎস্য দপ্তরে কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারিগণ। তবে প্রকল্পের জনবল নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত উপজেলা মৎস্য দপ্তরে কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারিগণ সুফলভোগীদের তালিকা তৈরী ও তাদের বেইজলাইন সার্ভের কাজটি করবেন।