দেশের ইলিশ সম্পদ ধ্বংসের এবং উৎপাদন কমে যাওয়ার পেছনে যে কারণগুলো রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নির্বিচারে ক্ষতিকর জাল ও সরঞ্জাম দিয়ে জাটকা ও মা ইলিশ আহরণ। যদি এই ক্ষতিকর অবৈধ জাল ও সরঞ্জাম নির্মূল না করা যায় তাহলে ইলিশের কাঙ্ক্ষিত উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হবে। তাই প্রকল্পের অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য নির্ধারণ করা হয়েছে জাটকা ও মা ইলিশ সংরক্ষণের মাধ্যমে ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধি করা। এই উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাসহ নদী, মাছ বাজার, মাছ ঘাট, হাট, আড়ত ইত্যাদিতে অভিযান পরিচালনা করা অপরিহার্য। তাই প্রকল্পে জাটকা ধরা নিষিদ্ধ সময়ে এবং মা ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ সময়ে জেলেদের অবৈধ মাছ ধরা বন্ধে বিভিন্ন ধরনের কম্বিং অপারেশন, ক্র্যাশ প্রোগ্রাম এবং অভিযান পরিচালনার সংস্থান রাখা হয়েছে।
“সম্মিলিত বিশেষ অভিযান” সফলভাবে বাস্তবায়িত হওয়ায় প্রকল্পে মৎস্যসম্পদ ধ্বংসকারী অবৈধ জাল নির্মূলকরণে বিশেষ ক্রাশ কার্যক্রম পরিচালনার সংস্থান রাখা হয়েছে। কেননা কেবলমাত্র রুটিন মাফিক মোবাইল কোট পরিচালনা ও অভিযান বাস্তবায়ন করে উপকূলীয় মৎস্য সম্পদের সহনশীল উৎপাদন করা সম্ভব নয়। এই ধ্বংসাত্মক অপতৎপরতার ফলে কেবল পোনা মাছ অবাধে ধরা হচ্ছে তাই না এসব মাছের আবাসস্থল, নার্সারি গ্রাউন্ড, ব্রিডিং গ্রাউন্ডও নষ্ট হচ্ছে। প্রকল্পের সংস্থান অনুযায়ী জাটকা এবং অন্যান্য মাছের পোনা রক্ষায় দেশের 14 (চৌদ্দ) টি জেলার 71 (একাত্তর) টি উপজেলায় বিশেষ ক্রাশ কার্যক্রম বাস্তবায়িত হবে। এ লক্ষ্যে প্রকল্প মেয়াদে মোট 1278 (এক হাজার দুইশত আটাত্তর) টি বিশেষ ক্রাশ প্রোগ্রাম বাস্তবায়ন করা হবে। একটি অপারেশন সাধারণত 15 (পনের) দিন চলবে। উপকূলীয় মৎস্য সম্পদ রক্ষায় এই বিশেষ অভিযানে মৎস্য অধিদপ্তরের পাশাপাশি বিভিন্ন সংস্থা যেমন জেলা প্রশাসন, পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, নৌ বাহিনী এবং কোস্টগার্ড সম্মিলিতভাবে কাজ করবে।
এলাকা ভিত্তিক মোবাইল কোর্ট পরিচালনা ও বিশেষ ক্রাশ কার্যক্রম পরিচালনার পাশাপাশি জাটকা ও মা ইলিশ রক্ষায় নিষিদ্ধ সময়ে ব্যাপক অভিযান পরিচালনা করা হবে। এই প্রকল্পের আওতায় দেশের 29 (উনত্রিশ) টি জেলার 134 (একশত চৌত্রিশ) টি উপজেলায় ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে সরকার ঘোষিত ২২ (বাইশ) দিন মা ইলিশ ধরা এবং নভেম্বর-জুন 08 (আট) মাস জাটকা ধরা নিষেধাজ্ঞার সময়ে বিশেষ ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হবে। প্রকল্প মেয়াদে ২২ (বাইশ) দিন মা ইলিশ সংরক্ষণে ৩২১৬ ( তিন হাজার দুইশত ষোল) টি এবং জাটকা সংরক্ষণে ১৩৪০০ (তের হাজার চারশত) টি নদী, মোহনা, মাছঘাট, আড়ৎ ইত্যাদিতে মৎস্য সংরক্ষণ আইন বাস্তবায়ন করা হবে।